মাঝপথে বন্ধ কিংবা আটকে যাচ্ছে, আতংক
চট্রগ্রাম প্রতিনিধি :: বেশিরভাগ লিফট দীর্ঘদিনের পুরোনো। দু-একটি নতুনভাবে স্থাপন করা হলেও প্রতিদিন রয়েছে কোন না কোন অভিযোগ। মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত লোকের ভারে আটকেপড়া এটি নিত্যদিনের ঘটনা। কিছু কিছু এত পুরানো ৭-৮ জন লিফটে উঠলে আর চলতে চায় না। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের লিফটগুলো। হাসপাতালের ১৩টি লিফটের মধ্যেই বেশিরভাগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে এখন আতংকও রয়েছে সবার মাঝে। প্রতিমাসে এসব লিফট সংস্কার করার কথা থাকলেও তা না করায় এমন ত্রাহি অবস্থা।
যদিও এসব লিফটের দেখভাল প্রতিষ্ঠানের দাবি নিয়মিতই লিফটগুলো তারা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। তবে সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার পর হাসপাতালের লিফট সংস্কারে কাজ শুরু করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ। হাসপাতালে থাকা ১৩টি লিফটের সবগুলোই ধাপে ধাপে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটির এক্সপার্টরা। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আধুনিকভাবে চালু রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিভাগটির কর্মকর্তারা। তবে তাদের মতে, হাসপাতালের বেশিরভাগ লিফটেই ৯০ দশকের পর স্থাপন করা। এসব যদি নতুন করে স্থাপন করা হয়, তাহলে এমন সমস্যা আর দেখা দিবে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হলেও লিফটগুলো লাগানো হয় ৯০ দশকের পর। এরমধ্যে গত দুই বছর আগে পুরানো একটি লিফট সরিয়ে আধুনিক মানের একটি লিফট বসায় গৃহায়ন ও গণর্পূত বিভাগ। তবে গত দশ বছরের হিসেব অনুযায়ী নতুন কোন
লিফটেই বসানো হয়নি হাসপাতালে। পুরনো এসব লিফট দিয়েই চলছে তাদের কার্যক্রম। বয়সের ভাওে নুয়ে পড়েছে লিফটগুলো। এরমধ্যে এসব লিফট দেখাশোনা ও চালানোর জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডারের মাধ্যমে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন। এদের মধ্যে ডেফোডিল ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি ও চিটাগাং বিল্ডার্স নামে দুটি বেসরকারি কোম্পানি চমেক হাসপাতালের লিফটগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে। তবে নিয়মিত সংস্কার না করার কারণে কম-বেশ প্রতিদিন ঘটে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি লিফটের মধ্যে আটকের যাওয়ার একটি ঘটনায় বেশ আলোচনাও হয় চমেক হাসপাতালসহ সর্বত্রে। গুঞ্জন রয়েছে এ ঘটনার পর থেকেই সবগুলো লিফটের সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের (ই/এম) চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মাইনুল হক পূর্বকোণকে বলেন, ‘নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবেই লিফটগুলো সার্ভিস করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে এক্সপার্ট এনে সব লিফট দেখানো হয়েছে। কিছু ত্রুটি-বিচ্চ্যুতি আছে। তা সংস্কারের কাজ চলছে’।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাথরঘাটা বিস্ফোরণে আহতদের দেখে নামার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলটির অন্তত দশ শীর্ষ নেতা লিফটে আটকা পড়েন। যদিও ওই সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, লিফটি কিছুক্ষণের জন্য হ্যাং হয়ে যায়। তবে বিএনপির নেতারা জানান, লিফটে নিচে নামার সময় তৃতীয় তলায় এসে ঝাঁকি খান, এরপর একদম নিচে নেমে যায় লিফটটি।
পাঠকের মতামত: